Tuesday, April 14, 2020

অভিশপ্তেরা- ভাইরাসের কবলে মানুষ


১০ ,নভেম্বর ,২০১৯

সুহান মুখে মাস্ক নিয়ে বাইরে বের হল। বাইরে তেমন ঠান্ডা পড়ে নি। কিন্তু ভয়ানক ধুলা বাইরে। তাকে এই ধূলা পার করে বাসে করে যেতে হবে ধানমন্ডি । সাভার থেকে তাকে প্রায়দিনই বাসে করে আসতে হয় । অনেক সময় লাগে । চারিদিকে লোকজন গিজ গিজ করে। তাকে সবচেয়ে ঝামেলা পোহাতে হয় বাস পেতে। এরপর কোনমতে বাস পেয়ে আসতে গিয়ে পড়ে জ্যামে। এভাবে দিনের পর দিন তাকে ক্লাসে দেরী করে আসতে হয়েছে আর টিচারের বকা খেতে হয়েছে। সুহান প্রতিদিনই বাসে উঠে একটা কথাই ভাবত,"এই দেশে একটা ম্যাস জেনোসাইড হলে কেমন হত?”

২৯ , ডিসেম্বর , ২০১৯

ফেসবুকে হঠাৎ করে একটা ভাইরাস নিয়ে কথা হচ্ছিল। গুজব কি গুজব না সেটা সে বুঝতে পারছে না। এখনকার সময়ে গুজব টের পাওয়া মুশকিল। কে যে কি কথা বলে কোন হুশ জ্ঞ্যান থাকে না।

৩১, জানুয়ারি , ২০২০

নতুন বছরে সব কিছু নিয়েই একটা ঝামেলা চলছে । বাসায় সমস্যা চলছে । সুহানের বাবা মা এর ভেতরে এটা সেটা নিয়ে কিছু না কিছু একটা ঝামেলা লেগেই আছে। সুহানের বাসায় থাকতে ইচ্ছা করে না। এদিকে চায়নাতে নাকি এই ভাইরাস ভাল ভাবে ছড়িয়েছে সেটা নিয়েও অনেকের অনেক চিন্তা চলছে। সুহানের বড় ভাই চায়নাতে থাকে । সে বাসায় আসবে ফেব্রুয়ারীতে। সেটা নিয়ে তার বিশেষ মাথাব্যাথা নেই। এইবার তার ভাই আসলে বিয়ে হবে বলে সে জানে। হতে পারে সমসাটা সেটা নিয়েই।

১০, ফেব্রুয়ারী , ২০২০

সুহানের মারাত্মক জ্বর এসেছে। এরকম জ্বর কখনও আসে নি । মাথা ফেটে যাচ্ছে যন্ত্রণায় । এরকম হয়ে থাকলে যেকোন সময় নাক দিয়েও রক্ত পড়া শুরু হতে পারে। এর আগেও একবার এভাবে ঠান্ডা লেগে এই ঘটনা ঘটেছে। অসুখ হলে সে ওষুধ পত্র তেমন একটা খায় না। চেপে থাকার চেষ্টা করে।

২৮, ফেব্রুয়ারী , ২০২০

সুহানের নাক দিয়ে রক্ত পড়ল টানা তিনদিন । এর মধ্যে জ্বর আর মাথাব্যাথা তো ছিলই । এর মধ্যে দেশের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে । সবাই নাকি কম বেশি এইভাবে অসুখে পড়েছে । খুব খারাপ অবস্থা। ডাক্তার রা বলছেন ভাইরাল জ্বর । কিন্তু এ কেমন জ্বর? সারছেই না। তার উপর আজকে শুরু হল আরেক বিপদ। সকাল থেকে শুকনা কাশি । ভয়াবহ অবস্থা । কবে যে এসব সারবে কে জানে ?

১৫ -২৭, মার্চ , ২০২০

ভাইরাস চায়না থেকে এমন বাজেভাবে ছড়াবে কে জানতো। তার বড় ভাই মার্চ মাসের ২ তারিখে বাসায় আসছে। মোটামুটি এক রুমের ভেতরে আটকে আছে। তারা বাসায় মাস্ক মুখে নিয়ে ঘুরাফিরা করছে। সুহান এর অবশ্য একটু আরাম হয়েছে। তার এমনি বাইরে গিয়ে সিগারেট খাওয়া অভ্যাস নেই। তাই কোন নেশাটেশা হবার সম্ভাবনা নেই। ক্লাস বন্ধ। তাই বাসে বসে কষ্ট করে যাওা লাগছে না ক্লাসে। বাসায় বসে সারাদিন মুভি দেখে , গল্পের বই পড়ে, একটু আধটু পড়াশুনা করে। তবে ৩ দিনে একবার বাজারের জন্য সে বাবার সাথে বাইরে যায় । এমনি বাসায় বসে থাকলেও তার কাছে জিনিস পত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার ব্যাপার টি খারাপ লেগেছে। সবাই যার যার মত করে জিনিস পত্র নিয়ে মজুদ করছে তাদের বাসায়। এক দোকানদার তাকে বলেছিল, "এই যে একে জনে যেমনে খাবারগুলান লইয়া যাইতেছে ,এত্ত খাবার খাইব কেম্নে? ”

৩০, মার্চ, ২০২০

খাবার মজুদ করা এবং প্রোডাকশন লেভেলে টান পড়ার কারণে জিনিস পত্রের দাম বাড়া শুরু করল। কি এক ভয়াবহ অবস্থা। সবাই যে যার মত করে আগেই খাবার মজুদ করে দামের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এরা মোটামুটি যা শুরু করেছে খাদ্য-দ্রব্য নিয়ে, একটা কুকুরও এভাবে খাবার নিয়ে মনে হয় মারামারি করে না। যে দিন সময় যাচ্ছে , মানুষই এখন মানুষের শত্রু হয়ে যাচ্ছে। কেয়ামত এর মত লাগছে চারিদিকে।






































Saturday, February 2, 2019

The mystry

#কন্ট্রোভার্সি
#ব্যক্তি১- এইগুলা কি করো সারাদিন? এইতা ওইতা সাইরা বেড়াও! এ দিয়ে কি হয়??
#ব্যক্তি২-তুমি যেসব কাজ করো সেগুলার ইম্পলেমেনশন আগেই হয়ে গেছে। এসব করে আর কি করবা? কোন লাভ নাই।
#ব্যক্তি৩-এইসব প্রোজেক্ট করে কি হয়? কিচ্ছু না। অযথা টাইম নষ্ট

আমার কোয়েশ্চেন।আপনারা কি করেন?
মোস্ট অফ টাইম ওই পাশ থেকে কোন উত্তর আসে না। আমি আমাদের ক্যাম্পাসের এক বড় ভাইকে চিনি, যিনি মাঝে সাঝেই আমাদের রুমে এসে বলতেন,"তুমি এইটা পারবানা ওইটা পারবানা!" জিগেস করলাম আপনি কি করেন?" বলল সরকারী চাকরী খুঁজি। ভাল বেতনের চাকরী খুঁজি। তার মানে উনি আসলে কিছুই করেন না। আরেকজন বলেছিল তার কি সব প্ল্যান আছে সেগুলা এক্সিকিউট হবার অপেক্ষায় বসে আছেন।

আমি মনে মনে ভাবি। আল্লাহ পাক এই পাপীরে ম্যাসিভ লেভেল এর হেদায়াত দিছে যারে সারাদিন এইসব আলছাল চিন্তা করতে হয় না(বেশি চিন্তা করলে মাথা ভার লাগে)। এট লিস্ট কিছু একটা তো করছি। আমি জানি না ৫ বছর পর মাটির কোন সাইডে থাকব। তারপরেও কিছু একটা করছি এট লিস্ট।

পোস্ট দেয়ার উদ্দ্যেশ্য,,,,, আমাদের আশেপাশের সব মানুষ শুধুমাত্র স্বপ্ন দেখে। কেও কেও চোখ খুলেও দেখে আবার। এদের বড় সমস্যা এদের ইগো আর জিদ ধরে রাখার জন্য খামোকা অনেক সময় নষ্ট করে।
-আমার ওই চাকরীই করা লাগবে।
-এই টাই করা লাগবে।
ফলাফল নিজের শুদ্ধ আরেকজনের লাইফ হেল করা।  ছাইড়া দে চাচী।
কাইন্দা বাঁচি।
#কন্ট্রোভার্সিঃ
টাইমিং টা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট জিনিস। আমি হয়ত প্র‍্যাক্টিক্যালি চিন্তা করছি না। নির্দিষ্ট সময় পার করার পর একজন মানুষ ভাল কিছু করতেও পারে।
(#বিঃদ্রঃ ৫ বছর পর সোহান চাকরীর জন্য দৌড়ুবে। আর এই পোস্ট করার জন্য মানুষের গুঁতা খাবে।)
#অভিশপ্তেরা

Wednesday, May 30, 2018

বিশ্বাস

বিশ্বাস করার ক্ষমতাটা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা যে কার দোষে হচ্ছে বলা মুশকিল। বিশ্বাস না করতে পারাটাও এক বড়সড় রকমের সমস্যা। মানসিক অশান্তি হতে থাকে। অদ্ভূত এক ব্যাপার। খুব বেশি জেনে ফেলাটাও এক ধরণের অভিশাপ। মাথাটা যন্ত্রণা করে। খুব যন্ত্রণা করে

Tuesday, May 15, 2018

Corner of Imagination

(পুররররত) [ গ্যাস এর শব্দ ]
-ইয়াক!  এইগুলা কি করিস সোহান?
-কি করি?
-লাইব্রেরির মধ্যে বসে,,,, এত সাউন্ড করে???
-সমস্যা কি আরও জোরে মারব??
-কিহ?
(পুররররররররত)[ আরও জোরে ]
-What are you doing Shohan? Are you out of your mind?
(After a break of silence)
-Strange. No one is here. Not even the librarian.
-Yes my dear. Just you and me.
-How?
-There is no one here. It is just the corner of my imagination. And we are all alone here. Just you and me.

Friday, May 11, 2018

Confession(গল্প লেখা)

আমি ভাদুড়ি এপার্টমেন্টে থাকতে ভ্যাম্পায়ার নিয়ে একটা গল্প লিখেছিলাম। কিন্তু গল্পটা হারিয়ে গেছে।
ভ্যাম্পায়ার নিয়ে লেখা। পাশের বাড়ির ভ্যাম্পায়ার নিয়ে আরকি।
তারপর.....
ইশ! হারায়া গেল।।

Monday, February 12, 2018

অভিশপ্তেরা (বিবিধ অধ্যায়-২)-স্তব্ধ কান্না

 স্রষ্টা এবং শিক্ষকদের মধ্যে একটা মিল আছে।  সেটা হল স্রষ্টা যেমন সৃষ্টির পরিণতি জানেন, শিক্ষকও জানেন তার শীক্ষার্থীদের পরিণতি। তফাৎ টা হল, স্রষ্টা তার নিয়ম রেশিনালি চেঞ্জ করবেন না। কিন্তু একজন শিক্ষক সেটা পারেন। একজন শিক্ষক চাইলে তার ছাত্র-ছাত্রীদের পাশ-ফেল করিয়ে দিতে পারেন। হেনস্থাও করতে পারেন।
একজন শীক্ষার্থীকে হেনস্থা করার সবচেয়ে সহজ বুদ্ধিটি হল এক্সামের প্রশ্ন। যেহেতু একজন শিক্ষক জানেন তার ছাত্র-ছাত্রীদের কি অবস্থা তাই এনালাইসিস করে তিনি দুইটা ঘটনা করতে পারেন। ১.হয় তিনি এমন কিছু দেবেন যেটা সবাই পারে না, ২.নাহলে এমন কিছু দেবেন যেটা বেশিরভাগ পারে।
এবারে হেনস্থা করতে কি দরকার সেটা আপনি বুঝে গেছেন। জাস্ট এমন একটা টপিক থেকে কোয়েশ্চেন করুন যেটা কিনা কেও পারে না। ফুরিয়ার এনালাইসিস হল সেরকমই একটি টপিক। সুহান ম্যাথ এর কোয়েশ্চেন টার দিকে একধরনের উপহাস্য-বিরস মুখে তাকিয়ে আকাশ-পাতাল চিন্তা করছে। এটা কি ম্যাথ এর কোয়েশ্চেন নাকি আরও এক সেমিস্টার তাকে বসিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র।
এক্সাম শুরু হয়েছিল ১০ টায়। মোটামুটি দেড় ঘন্টায় আড়াই সেট প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সুহান চুপচাপ বসে ভাবছে কি করা যায়। পাশে কম্পিউটার সায়েন্সের এক্সাম চলছে। তাদের এক এক্সাম, অন্যদের আরেক এক্সাম। পাশে তাকিয়ে সুহান দেখল সেখানে WAN,LAN এগুলো নিয়ে কোয়েশ্চেন। হতে পারে নেটওয়ার্কিং এর এক্সাম। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তার মুখে হাসি চলে আসল। এক্সাম হলে আবার সেই এক গার্ড পড়েছিলেন। সুহানের মুখে হাসি দেখে উনি তেড়ে আসতেছিলেন। সুহান মোটামুটি ৩ সেকেন্ডের ভিতরে স্থির করে নিল টিচারকে খাতা দিয়ে বের হয়ে আসবে। তো যা ভাবা তাই। স্যার আসছিলেন কেড়ে নিতে, সে স্যার কে আপোসে খাতা ধরিয়ে দিয়ে হল থেকে বের হয়ে গেল। এরপরেও তার ভিতরে কোন ভয় কাজ করছে না। বরং মজা পাচ্ছে এই ভেবে, ম্যাথ এক্সাম দিতে গিয়ে, নেটওয়ার্ক এর কোয়েশ্চেন দেখে হেসে ফেলার জন্য স্যার তার খাতা কেড়ে নিচ্ছিল। হয় এই টিচার বিপদে আছে, নাহলে পরীক্ষার্থীরা।
ক্লাস থেকে বের হয়ে নিচে এসে দেখল তারই ডিপার্টমেন্ট এর এক বড় আপু কোয়েশ্চেন হাতে ধরে কান্নাকাটি করছেন। আর এক ভাই মাথায় হাত রেখে তাকে থামানোর চেষ্টা করছেন। এই ব্যাপারটা দেখে একই সাথে সুহানের ভিতরে কয়েকটা ব্যাপার কাজ করছে। একবার ভাবল কাছে গিয়ে তাকে স্বান্তনা দেওয়া উচিৎ, তারপরেই মনে হল ব্যাপারটা ঠিক হবে না। উনারা মাইন্ড করতে পারেন। কিছুক্ষণ পর আবার নিজের কথা ভাবল, ইনাকে তো তাও কেও একজন স্বান্তনা দিচ্ছেন, কিন্তু প্রতিদিন তার উপর যে ঝড়গুলো যায় সেগুলোর কথা কেও হয়ত জানেও না। আর কান্না করতে পারাটাও অনেক ভাল একটা ব্যাপার। সুহান তো তাও পারে না। খুব প্রিয় কোন মানুষের কোলে মুখ লুকিয়ে কান্না করার মাঝে একটা শান্তি আছে।
এইসব আবোলতাবোল ভেবে ভেবে বাসায় আসল সুহান। তারপর চিন্তা করল ম্যাথের কথা। এইযে ম্যাথ গুলো যে করানো হয়। এর উদ্দেশ্য কি? ফুরিয়ার এনালাইসিস জিনিসটা অনেক কাজের জিনিস। সার্কিট সিমুলেশন প্রোগ্রামেও এগুলোর ব্যবহার আছে। কিন্তু এত এত বাজেভাবে ম্যাথগুলো করানো হয় সেটা বলার মতো না।

অনেক্ষণ পরেও সুহান সেই বড় আপুর কথা মনে করছে। হাসিখুশি, ফর্সা একটা মানুষ, জাস্ট এক্সামের এক সপ্তাহ আগে থেকে উনার মুখের এমন অবস্থা হয়েছে যেন মনে হয় এখনি কাদায় পিছলে পড়ে গেছিলেন। ফাইনাল সেমিস্টার, ফাইনাল ইয়ার বলে কথা।

Monday, January 22, 2018

হতে পারে - সোহান আরাফাত

হতে পারে আজকের পর থেকে কারো কারো সাথে আর দেখা হবে না,
হতে পারে আজকের পর অনেকেই আর পোস্টে লাইক দেবে না,
হয়ত বা আর মেসেজিং হবে না সেভাবে,কিংবা কখনই,
হয়ত দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাবে লেখাগুলো,
নোটিফিকেশন এর যন্ত্রণায় করে দেবে ইগ্নোর,

হতে পারে প্রচন্ড দরকার পড়লেও আর আসবে না কাছে,
জিজ্ঞেস করবে না কখনও লজিক গেট দিয়ে কিভাবে প্রোজেক্ট তৈরি করে,
কিংবা স্যার কি করেছিল গত সপ্তাহে,

হতে পারে ভয় পেয়ে আর চোখে চোখ মেলাবে না অনেকেই,
হতে পারে ভুল ভেবে, মিথ্যা অজুহাতে, দূর করে দেবে আমায়,

হতে পারে, হয়ত।

কিন্তু জেনে রেখ,
হতে পারে তোমাদের এড়িয়ে যাচ্ছি এমন টা ভাবো।
না, এড়িয়ে যাই না কখনও,
শুধু আমার প্রতি তোমাদের ঘৃণা কে সম্মান দিয়ে পাশে সরে আসি।

হতে পারে আমি উঁকি দেই দেখতে, ফায়ার এক্সিটে কিংবা কোন চিপায় চাপায় কেও আছে কিনা বসে,খাতটা ধরে বিরস নয়নে।

হতে পারে তোমায় পছন্দ করি। কিন্তু হয়ত বন্ধু হতে চেয়ে। তোমাদের লীলাখেলার সাথী হয়ে নয়।

হতে পারে আমি এখনও বসে থাকি, কেও আমায় বলবে এসে, সমস্যা কি সমস্যা কি? সমাধান টা দিতে পারি।

হতে পারে,,হুম,,হতে পারে।।।