Friday, January 5, 2018

অভিশপ্তেরা Chapter -4 হতাশা

Chapter-4 (হতাশা)
ভার্সিটিতে ভর্তির জুস টা খুবই বাজেভাবে ছেলে-মেয়েদের খাওয়ানো হয়। এই জুস খেয়ে এরাও ভ্রান্তিতে ভুগে। একসময় ভ্রান্তিটাই অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। সব মা-বাবাই চায় তার ছেলে-মেয়েরা এক সময় নিজে থেকে সব বুঝবে।ব্যাপারটা এত সহজ না। মানুষ একটা জিনিস অনেক ভাবে বুঝতে পারে। বাংলাদেশে সব মা-বাবাই তাদের ছেলেমেয়েদের শেখান সরকারী ইউনিভার্সিটি তে চান্স পেলে আরামে থাকবা।
এই ব্যাপারটাই একসময় তারা নিজেদের কে ভুল ভাবে বুঝায়। শিক্ষক যখন সাজেশন দেয় সেটা থেকে আমরা নিজেরা আবার সাজেশন করে পড়া শুরু করি। এখানেও ব্যাপারটা সেরকম হয়। অনেকেই আছে ভার্সিটিতে উঠে নিজের ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়ায়। ইফেক্ট টা ইভেঞ্চুয়ালি তাদের ক্যারিয়ারের উপর পড়ে। ফলাফল যখন ম্যাচিউরিটি আনা দরকার তখনও ম্যাচিউরিটি আসে না। এরা সময় নষ্ট করে মরীচিকার পিছে ঘুরে।
সুহান বেশ চাপা স্বভাবের একটি ছেলে,  কারও সাথেও তেমন একটা যোগাযোগ নেই। যোগাযোগ রাখার ইচ্ছাও নেই। ক্যাম্পাসে ঢোকার আগে সে মোটামুটি একটা প্রতিজ্ঞা করেছিল যে ক্যাম্পাসে উঠে সে ফ্রেন্ড বানাবে না। কিন্তু তারপরেও অনেকের সাথে অনেক ভাবে যোগাযোগ হয়েছে/যোগাযোগ রেখেছে।
ক্যাম্পাস লাইফ টা ঠিক যেরকম প্রেডিক্ট করেছিল সুহান তেমন টা হয়নি। এখানে মোটামুটি সবাই কোনমতে পাশ করে বের হবার উদ্দেশ্যে থাকে। কোন ইনভেন্টিভ কাজ কর্ম এখানে কেওই করে না। এদেরও দোষ দেওয়া যায় না। আসলে সময় কই।
সবাইকে এক রকম ঘোরের মধ্যে রেখে দিয়েছে এই ক্যাম্পাস কর্ত্রীপক্ষ। এই একই দল দুমুখো সাপের মতো কাজ করে। এক দল বলে পড়াশোনা না করলে রেজাল্ট খারাপ হবে। আর প্রাইভেট ভার্সিটিতে রেজাল্ট খারাপ করা আবার আরেক বিপদ। রিপিট দাও,ফিস দাও,নতুন করে এটা সেটা করো। আরেকদল বলবে কাজ কর,কাজ শিখ, নাহলে পরে যেয়ে প্রোফেশনাল লাইফে উন্নতি করতে পারবে না। বিশাল বিপদ একটা করতে গেলে আরেকটা হয় না। কেও কাজ শিখতে যাবে,পড়া হবে না। আর শুধু পড়তে থাকলে কাজ কিছুই শিখবে না।
এগুলো তো যাই হোক ক্যাম্পাস থেকে হয়। এ বাদেও বুলি(Bully) করা, ঝামেলা পাকানো এসব তো নিজেদের ভিতরেও হয়। ক্যাম্পাসে এসে সুহান টের পেল আসলে সবাই ক্যাম্পাসে পড়ার জন্য ভর্তী হয় না। কারও কারও আবার অন্যান্য নিয়ত থাকে। আসলে বর্তমান অবস্থা এমন হয়ে গেছে সার্টিফিকেট না থাকলে চাকরী মেলে না। চাকরী না পেলে ভবিষ্যৎ এর কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই কেও কেও কোনরকম পাশ করার জন্য ক্যাম্পাসে ভর্তী হয়।  আশায় থাকে অন্তত সার্টিফিকেট টা থাকলে কিছু একটা করা যাবে।
এদের মধ্যে আবাবার অনেকেরই কাজ করার প্রতি অনীহা থাকবে। তারা নিজেরাও কাজ করবে না,আবার অন্যেরা কাজ করলেও তারা নাক সিঁটকাবে। ক্লাসে এমন ঝামেলার সম্মুখীন হওয়া লেগেছে। একবার একটা পিকনিকে যাওয়ার ব্যাপারে সুহান রাজী না হলে রিক্ত ক্লাসে বলেছিল," সুহান,তুই কি সারাজীবনই এমন আঁতেল হয়ে থাকবি।"
অন্য কেও হলে ক্ষেপত। আঁতেল এর আক্ষরিক অর্থ টা তেমন কিছু না হলেও ভাবার্থ টা অনেক ভয়ানক। সুহান কিছু বলে না। এদের মত কারও সাথে ঘোরাঘুরি করা পিকনিক করে বেড়ানো এগুলো সুহানের ভিতর থেকে অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। কোথাও বেড়াতে গেলেই ২ দিন ধ্বংস। ২ দিনে কি কি করা যেতে পারে এ ব্যাপারে এদের কারোরই কোন অনুমান নেই।
মাঝে মাঝে সুহান হতাশাবোধ করে। খুব একা মনে হয় নিজেকে। আশেপাশে আরও হতাশ মানুষ আছে। এরা অনেকেই নিজেদের হতাশাগ্রস্থ করে রাখে। কেও দিনের পর দিন ধোয়াঁ উড়িয়ে নিজেদের এই মিথ্যা হতাশা কাটাচ্ছে। কেও শুনছে হতাশাবাদীদের গান। অথচ সময় টা কাজে লাগাচ্ছে না। কি অদ্ভূত। এরা নিজেদের সমস্যা এবং সমাধান দুইই জানে অথচ কিছুই করে না।
একটা ব্যাপারে সুহান নিশ্চিত ছিল। এইখান থেকে যত দ্রূত সম্ভব বের হতে হবে। আবেগ দেখানোর কোন সময় নেই।

https://drive.google.com/file/d/1_r8qIv7FhOnCDa8hgaxU3Z5YxzpnWPIL/view?usp=drivesdk

No comments:

Post a Comment