১০
,নভেম্বর
,২০১৯
সুহান
মুখে মাস্ক নিয়ে বাইরে বের
হল। বাইরে তেমন ঠান্ডা পড়ে
নি। কিন্তু ভয়ানক ধুলা বাইরে।
তাকে এই ধূলা পার করে বাসে করে
যেতে হবে ধানমন্ডি । সাভার
থেকে তাকে প্রায়দিনই বাসে
করে আসতে হয় । অনেক সময় লাগে
। চারিদিকে লোকজন গিজ গিজ করে।
তাকে সবচেয়ে ঝামেলা পোহাতে
হয় বাস পেতে। এরপর কোনমতে বাস
পেয়ে আসতে গিয়ে পড়ে জ্যামে।
এভাবে দিনের পর দিন তাকে ক্লাসে
দেরী করে আসতে হয়েছে আর টিচারের
বকা খেতে হয়েছে। সুহান প্রতিদিনই
বাসে উঠে একটা কথাই ভাবত,"এই
দেশে একটা ম্যাস জেনোসাইড
হলে কেমন হত?”
২৯
, ডিসেম্বর
, ২০১৯
ফেসবুকে
হঠাৎ করে একটা ভাইরাস নিয়ে
কথা হচ্ছিল। গুজব কি গুজব না
সেটা সে বুঝতে পারছে না। এখনকার
সময়ে গুজব টের পাওয়া মুশকিল।
কে যে কি কথা বলে কোন হুশ জ্ঞ্যান
থাকে না।
৩১,
জানুয়ারি
, ২০২০
নতুন
বছরে সব কিছু নিয়েই একটা ঝামেলা
চলছে । বাসায় সমস্যা চলছে ।
সুহানের বাবা মা এর ভেতরে এটা
সেটা নিয়ে কিছু না কিছু একটা
ঝামেলা লেগেই আছে। সুহানের
বাসায় থাকতে ইচ্ছা করে না।
এদিকে চায়নাতে নাকি এই ভাইরাস
ভাল ভাবে ছড়িয়েছে সেটা নিয়েও
অনেকের অনেক চিন্তা চলছে।
সুহানের বড় ভাই চায়নাতে থাকে
। সে বাসায় আসবে ফেব্রুয়ারীতে।
সেটা নিয়ে তার বিশেষ মাথাব্যাথা
নেই। এইবার তার ভাই আসলে বিয়ে
হবে বলে সে জানে। হতে পারে
সমসাটা সেটা নিয়েই।
১০,
ফেব্রুয়ারী
, ২০২০
সুহানের
মারাত্মক জ্বর এসেছে। এরকম
জ্বর কখনও আসে নি । মাথা ফেটে
যাচ্ছে যন্ত্রণায় । এরকম হয়ে
থাকলে যেকোন সময় নাক দিয়েও
রক্ত পড়া শুরু হতে পারে। এর
আগেও একবার এভাবে ঠান্ডা লেগে
এই ঘটনা ঘটেছে। অসুখ হলে সে
ওষুধ পত্র তেমন একটা খায় না।
চেপে থাকার চেষ্টা করে।
২৮,
ফেব্রুয়ারী
, ২০২০
সুহানের
নাক দিয়ে রক্ত পড়ল টানা তিনদিন
। এর মধ্যে জ্বর আর মাথাব্যাথা
তো ছিলই । এর মধ্যে দেশের অবস্থা
ক্রমেই খারাপ হচ্ছে । সবাই
নাকি কম বেশি এইভাবে অসুখে
পড়েছে । খুব খারাপ অবস্থা।
ডাক্তার রা বলছেন ভাইরাল জ্বর
। কিন্তু এ কেমন জ্বর?
সারছেই
না। তার উপর আজকে শুরু হল আরেক
বিপদ। সকাল থেকে শুকনা কাশি
। ভয়াবহ অবস্থা । কবে যে এসব
সারবে কে জানে ?
১৫
-২৭,
মার্চ
, ২০২০
ভাইরাস
চায়না থেকে এমন বাজেভাবে ছড়াবে
কে জানতো। তার বড় ভাই মার্চ
মাসের ২ তারিখে বাসায় আসছে।
মোটামুটি এক রুমের ভেতরে আটকে
আছে। তারা বাসায় মাস্ক মুখে
নিয়ে ঘুরাফিরা করছে। সুহান
এর অবশ্য একটু আরাম হয়েছে।
তার এমনি বাইরে গিয়ে সিগারেট
খাওয়া অভ্যাস নেই। তাই কোন
নেশাটেশা হবার সম্ভাবনা নেই।
ক্লাস বন্ধ। তাই বাসে বসে কষ্ট
করে যাওা লাগছে না ক্লাসে।
বাসায় বসে সারাদিন মুভি দেখে
, গল্পের
বই পড়ে,
একটু
আধটু পড়াশুনা করে। তবে ৩ দিনে
একবার বাজারের জন্য সে বাবার
সাথে বাইরে যায় । এমনি বাসায়
বসে থাকলেও তার কাছে জিনিস
পত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার ব্যাপার
টি খারাপ লেগেছে। সবাই যার
যার মত করে জিনিস পত্র নিয়ে
মজুদ করছে তাদের বাসায়। এক
দোকানদার তাকে বলেছিল,
"এই
যে একে জনে যেমনে খাবারগুলান
লইয়া যাইতেছে ,এত্ত
খাবার খাইব কেম্নে?
”
৩০,
মার্চ,
২০২০
খাবার
মজুদ করা এবং প্রোডাকশন লেভেলে
টান পড়ার কারণে জিনিস পত্রের
দাম বাড়া শুরু করল। কি এক ভয়াবহ
অবস্থা। সবাই যে যার মত করে
আগেই খাবার মজুদ করে দামের
বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এরা
মোটামুটি যা শুরু করেছে
খাদ্য-দ্রব্য
নিয়ে,
একটা
কুকুরও এভাবে খাবার নিয়ে মনে
হয় মারামারি করে না। যে দিন
সময় যাচ্ছে ,
মানুষই
এখন মানুষের শত্রু হয়ে যাচ্ছে।
কেয়ামত এর মত লাগছে চারিদিকে।
No comments:
Post a Comment